লিভার ভালো রাখার উপায়

লিভার ভালো রাখার উপায়। লিভার আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন একটি অংশ হিসেবে কাজ করে। আমাদের কিছু বদ অভ্যাস বা খারাপ অভ্যাসের কারণে মূলত লিভারে নানানরকম সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের মনে রাখা উচিৎ লিভারের ক্ষতি হলে আমরা স্বাভাবিক ভাবে জীবনযাপন করতে পারবো না। অসাস্থকর জীবযাপন আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর এবং লিভারের জন্য ও ক্ষতিকর। সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে হলে আমাদের লিভার কে সুস্থ রাখা আবশ্যক। নিত্যদিনে আমরা কিছু কাজ করলেই আমরা আমাদের লিভার কে সুস্থ রাখতে পারবো। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানতে চলেছি লিভার ভালো রাখার উপায় গুলো।

লিভার ভালো রাখার উপায় (Ways to keep the liver healthy)

লিভার ভালো রাখার উপায়

চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং বিশেষজ্ঞরা বলেন যে, খাদ্যভ্যাস ও জীবনযাপনে ব্যাঘাত ঘটলে লিভারে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞান আরও বলে যে, লিভার ঠিক থাকলেই আপনি ঠিক থাকবেন। খাবারে কিছু পরিবর্তন আনলেই আপনার লিভার সুস্থ থাকবে। চলুন দেখে নেই কি কি পরিবর্তন আনলে লিভারের সমস্যা থেকে বাঁচা যাবে এবং লিভারের সমস্যা দূর হবে।চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে লেবুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানগুলো আমাদের দেহের লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও লেবুতে থাকা ভিটামিন সি আমাদের দেহে থাকা লিভারের জন্য বেশ উপকারী। কেননা ভিটামিন সি লিভারে অনেক বেশী পরিমানে এনজাইম তৈরি করতে সাহায্য করে। আর এই এনজাইম আমাদের শরীরের হজম শক্তির জন্য বেশ উপকারী। লেবুর বেশ উপকারিতা রয়েছে এটা আমরা কমবেশী সবাই জানি। লেবুর মিনারেল আমাদের লিভারের নানান পুষ্টি উপাদানগুলো শোষণ করার শক্তি বৃদ্ধি করে। তাই আমাদের উচিৎ বেশি বেশি লেবু পানি পান করা। লেবু পানি যেমন আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে তেমনি লিভারের জন্য ও বেশ উপকারি। আপনি চাইলে লেবু পানির সাথে মধুও মিশিয়ে পান করতে পারেন।

লিভার ভালো রাখার উপায় অন্যতম উত্তম খাবার হলো রসূন। রসুনের এনজাইম লিভারের ক্ষতিকর উপাদান গুলো কে পরিষ্কার করে। রসুনে আরও দুটি উপাদান রয়েছে যার একটি এলিসিন ও অপরটি সেলেনিয়াম। এই দুটি উপাদান আমাদের শরীরের লিভার পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। লিভার পরিষ্কার রাখতে প্রতিদিন ২/৩ টি রসুনের কোয়া খেয়ে নিলেই হবে। আপনি চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সরুনের তৈরি ভিটামিন ও খেতে পারেন।

আরও পড়ুন: মুখে ব্রণ দূর করার উপায়

আরও পড়ুন: চুলের যত্নে হেয়ার প্যাক

আরও পড়ুন: রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

আরও পড়ুন: মানসিক চাপ দূর করার উপায়

আপেল ও আঙ্গুর ও লিভার সুস্থ রাখতে দারুণ ভূমিকা পালন করে। আপেলের পেক্টিন আমাদের দেহের পরিপাক নালী থেকে টক্সিন এবং রক্ত থেকে কোলেস্টরোল দূর করতে সাহায্য করে যার ফলে আমাদের লিভার সুস্থ থাকে। আপেলে আরও রয়েছে ম্যালিক এসিড। যা আমাদের শরীরের রক্ত থেকে প্রাকৃতিক ভাবেই ক্ষতিকর টক্সিন গুলোকে দূর করে। যে কোনো ধরনের আপেল আমাদের লিভারের জন্য ভালো। তাই লিভার পরিষ্কার রাখতে আমাদের কে প্রতিদিন আপেল খাওয়া প্রয়োজন।

একটি বিশেষ গবেষনার মাধ্যমে দেখা গিয়েছে যে, গ্রিন টি আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারি। গ্রীন টি তে প্রচুর পরিমানে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। আর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের লিভার কে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। একইসাথে গ্রীন টি খাওয়ার ফলে লিভার থেকে মেদ ঝড়াতেও এটা অনেক সাহায্য করে থাকে।

আপনি হয়তো শুনে থাকবেন যে, কফি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তবে মজার ব্যাপার কি জানেন? কফি খাওয়ার অনেক সুফল রয়েছ। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলে যে, নিয়মিত কফি খেলে লিভারের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুকি কমপক্ষে ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।

ফ্যাট আমাদের শরীরের জন্য উপকারী। তাই শরির কে সুস্থ রাখতে হেলদি ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া জরুরি। ডায়েট করে থাকলেও হেলদি ফ্যাট জাতীয় খাবার খেতে হবে। ডায়েট কনট্রোল করার জন্য একেবারেই ফ্যাট খাবার খাওয়া বাদ দেওয়া যাবে না। জেনে রাখা ভালো যে, অলিভ ওয়ালনাট জাতীয় খাবারে হেলদি ফ্যাট থাকে লিভার ভালো রাখতে যা যা খাওয়া যাবে না

এতক্ষন আমরা জানলাম কিভাবে লিভার ভালো রাখার উপায় এবং কি কি খাবার খেলে লিভার ভালো থাকে। এবার আমরা জানবো যে, কিভার ভালো রাখতে হলে কি কি খাবার খাওয়া যাবে না বা কোন খাবার গুলো কম কম খেতে হবে।

লো ফ্যাট জাতীয় খাবার না খাওয়াঃ ফ্যাটি লিভারের সমস্যা এড়িয়ে চলতে হলে, অতিরিক্ত মদ্যপান, তেল- মশলাযুক্ত খাবার গুলো কম কম খেতে হবে। সুপার মার্কেটে অনেক পরিমানে ৯৯ শতাংশ লোয়ার ইন ফ্যাট লেখা যুক্ত খাবার পাওয়া যায়। লিভার ভালো রাখতে হলে এসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ। কেননা এসব খাবারে ফ্যাট বাদ দেওয়া হলেও চিনির পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া হয় অনেক শুধুমাত্র খাবারের স্বাদ ধরে রাখার জন্য।

ঔষধ খাওয়া থেকে সাবধানঃ বেশ কিছু ঔষধ রয়েছে যেগুলো আমাদের শরিরের ক্ষতি করে। এসব ঔষধ খাওয়া থেকে আমদের কে বিরত থাকতে হবে। বিশেষ করে কিছু পেইনকিলার যেমন, টাইলেনল বা কোলেস্টরেলরের ঔষধ গুলো আমাদের লিভারের ক্ষতি করে থাকে। এসব ঔষধ সেবন করা থেকে আমাদের কে বিরত থাকতে হবে।

আরও কিছু লিভার ভালো রাখার উপায় (Some other ways to keep your liver healthy)

ইঞ্জেকশন ও সার্জারি সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত না হলে তা ব্যবহারে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। হেপাটাইটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জ ও সার্জারি সরঞ্জাম ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত না করে ব্যবহার করলে হেপাটাইটিস ছড়িয়ে যেতে পারে। তাছাড়া ব্লাড ট্রান্সফিউশন করার সময় রক্তদাতার রক্ত যেন জীবাণুমুক্ত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারো ব্যবহারের জিনিস-পত্র শেয়ার করা যাবে না। ব্রাশ, ব্লেড, রেজার ইত্যাদি ব্যবহৃত জিনিসপত্র কাউকে শেয়ার করতে দেওয়া যাবে না এবং অন্যের ব্যবহার করা এ ধরনের জিনিসপত্র কোনোভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। এর কারন এ ধরনের ব্যবহৃত জিনিসপত্রের মাধ্যমে ভাইরাল হেপাটাইটিস আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে ছড়িয়ে যেতে পারে। হেপাটাইটিস-এ এবং হেপাটাইটিস-বি সংক্রমণ প্রতিরোধে সময় মত টিকা নিতে হবে।

আমাদের শেষকথা
আজকের এই ব্লগ পোস্ট এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম যে, লিভার ভালো রাখার উপায় গুলো কি কি? এবং কি খাবার খেলে আমাদের লিভারের ক্ষতি হবে, কোন কোন খাবার খেলে আমাদের লিভারের ক্ষতি হতে পারে। আশা করি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা লিভার ভালো রাখার উপায় গুলো সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হয়েছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। আমাদের এই ব্লগে আমরা নিয়মিত, সাস্থ টিপস, ভ্রমণ, টেকনোলজি, অনলাইন ইনকাম , কম্পিউটার ও মোবাইল টিপস এবং রিভিউ সম্পর্কিত আর্টিকেল গুলো পাবলিশ করে যাচ্ছি। আশা করি এই ব্লগটি আপনার পছন্দ হবে।