বান্দরবান হলো বাংলাদেশের পার্বত্য তিনটি জেলার মধ্যে একটি। ভৌগলিক কারণেই ভৌগলিক কারণেই বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান রয়েছে (Places to visit in Bandarban)। বান্দরবানের ঠিক উত্তর-পশ্চিমে অবস্থান করে চট্টগ্রাম জেলা, দক্ষিণ-পশ্চিমে কক্সবাজার জেলা, উত্তর দিকে অবস্থান করে রাঙ্গামাটি এবং পূর্ব দিকে মায়ানমার এর অবস্থান। বান্দরবানে রয়েছে অনেক পর্যটন কেন্দ্র বা ঘুরে দেখার স্থান। বান্দরবান জেলায় কি কি রয়েছে, কি কি দেখতে পারবেন, এবং এই জায়গা গুলো যাওয়ার সঠিক সময় ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত থাকছে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে।
নীলগিরি
বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান নীলগিরি বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি জায়গা। সেনাবাহিনী পরিচালিত বাংলাদেশের সুন্দরতম পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি হলো নীলগিরি। নীলগিরির দিগন্ত জুড়ে সবুজ পাহাড় আর মেঘের লুকোচুরি পর্যটকদের কে বিমোহিত করে রাখে। মেঘ ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে হলে ঘুরে আসতে পারেন বান্দরবানের নীলগিরি। বান্দরবান জেলা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে এবং সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২২০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থান করে নীলগিরি।
নীলগিরি থেকে আশেপাশে তাকালে আপনি দেখতে পারবেন সারি সারি মেঘ পাহাড়ের বুকে আছড়ে পরছে। মেঘের এই আছড়ে পরার দৃশ্য এবং প্রকৃতি আপনাকে মুগ্ধ করে তুলুবে। আকাশ পরিষ্কার থাকলে আপনি নিলগিরি পাহাড়ের চুড়া থেকে আপনার চখে পরবে বগলেক এবং বাংলাদেশের অন্যতম সর্বচ্চ পাহাড় চুরা কেওক্রাডং, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সাঙ্গু নদী এবং চট্টগ্রাম বন্দর।
নীলগিরি ভ্রমনের সঠিক সময়
নীলগিরি তার সৌন্দর্য সাড়াবছর ধরে রাখে। তবে একেক সময় একেক রুপ ধারন করে থাকে। সকালে মেঘের খেলা, সুর্যদয়, বিকেলের সুর্যাস্ত, এছাড়া জ্যোসনা রাতের মায়াময় রাত আপনাকে বিমোহিত করে তুলবে।
নীলগিরি ভ্রমণের জন্য সঠিক সময় হলো শরৎ ও হেমন্তকাল। এ সময় মেঘ আর নীল আকাশ মিলেমিশে একাকার হয়ে থাকে। শীতে কুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকে কুয়াশার চাদর। সে এক দেখার মতো দৃশ্য যা আপনি না দেখলে বিশ্বাস করবেন না বোধয়। যে কোনো সময় আপনি নীলগিরি ভ্রমন করতে পারবেন।
তবে বর্ষার সময় নীলগিরি ভ্রমন না করাই শ্রেয়। কেননা বর্ষায় পাহার ধ্বসের একটা আশংকা থেকে যায় আর অনেকসময় নীলগিরি যাবার রাস্থা বন্ধ তকে যায়।
নীলগিরি যাওয়ার উপায়
আপনি দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেনো নীলগিরি যেতে হলে আপনাকে প্রথমে আসতে হবে বান্দরবান। নীলগিরি যাওয়ার জন্য বান্দরবান থেকে জিপ গাড়ি, সি এন জি, চান্দের গাড়ি অথবা লোকাল বাসের মাধ্যমে যেতে হবে। সদস্য সংখ্যা কম হলে এবং কম খরচে বান্দরবান থেকে নীলগিরি যেতে চাইলে লোকাল বাসে যাওয়া যাবে।
বান্দরবান থেকে থানচির উদ্দেশ্য করে প্রতি ১ ঘন্টা পরপর বাস ছেড়ে যায়। এজন্য জনপ্রতি ১২০ টাকা খরচ হয়ে থাকে। তবে আপনি চাইলে ভাড়া শেয়ার করে কোনো টুর গ্রুপের সাথে যুক্ত হয়ে যেতে পারেন। তবে লোকাল বাসে যেতে হলে ১ ঘণ্টার মতো সময় লাগে সেখানে পৌঁছাতে।
নীলগিরি যাওয়ার পথে নিরাপত্তা জনিত কারণে সেনাবাহিনি কতৃক পর্যটকদের তথ্য হালনাগাদ করতে হয়। তবে সাধারনত বিকেল ৫ টার পর আর কোনো বাসকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। তাই নীলগিরি রওনা করার আগে অবশ্যই সময়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। নীলগিরি যাবার জন্য পর্যটকদের কাছ থেকে টিকিট বাবদ ৫০ টাকা জনপ্রতি এবং গাড়ি পার্কিং বাবদ ৩০০ টাকা ফি নেওয়া হয়ে থাকে।
নীলাচল
বান্দরবান জেলা থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত নীলাচল। নীলাচলের অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, আকাশ, পাহাড় আর মিতালী আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে। ভোরে সুর্যদয়ের সকাল আর বিকালের সুর্যাস্ত এই দুটি সময় নীলাচল তার পূর্ণতা ধারন করে। নীলাচল থেকে পুর বান্দরবান শহর কে দেখা যায়। আকাশ পরিষ্কার থাকলে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কিছু অংশ দেখা যাবে এই নীলাচল থেকে।
পর্যটকদের জন্য এখানে রয়েছে বেশ কয়েকটি বিশ্রামাগার এবং রিসোর্ট। মেঘের সাথে দেখা করতে হলে খুব ভোরে যেতে হয় নীলাচলে। নীলাচলে সাধারনত সকাল থেকে সন্ধ্যা অব্ধি অবস্থান করার অনূমতি দেওয়া হয়ে থাকে। তবে আপনি যদি রাত্রি যাপন করার জন্য রিসোর্টে থাকেন শুধুমাত্র তাদেরকেই সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়ে থাকে।
নীলাচল ভ্রমনের সঠিক সময়
বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান নীলাচলে বর্ষা, শরৎকাল আর হেমন্তের সময় হাতের কাছাকাছি মেঘ খেলা করে। তবে নীলাচলের একেক স্থানে প্রকৃতি একেক রকম রঙ্গে সাঁজে। তবে আপনি যদি নীলাচলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান এবং মেঘ ছুঁয়ে দেখতে চান তাহলে বর্ষা, শরৎ অথবা হেমন্তকালে নীলাচল ঘুরে আসতে পারেন।
নীলাচল যাওয়ার উপায়
বান্দরবান শহর থেকে নীলাচল যাওয়ার জন্য চান্দের গাড়ি, জিপ গাড়ি ও সিএনজি পাওয়া যায়। নীলাচলে অবস্থানের সময় অনুযায়ী অতো রিক্সা গুলোতে যাওয়া এবং আসার জন্য ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া হয়ে থাকে। জিপ ভাড়া ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা লাগতে পারে এবং চান্দের গাড়ি করে যেতে চাইলে ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত ভারা বহন করতে হতে পারে। তবে চেষ্ঠা করবেন দরদাম করে কম ভাড়ায় যাতায়াত করতে।
স্বর্ণ মন্দির
বান্দরবান জেলা থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত স্বর্ণ মন্দির। এটি বালুঘাট এলাকায় অবস্থিত। মহাসুখ মন্দির ও বৌদ্ধ ধাতু জাদী মন্দির নামেও এই মন্দিরটি সমানভাবে পরিচিত।
বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান স্বর্ণ মন্দির নাম দেওয়া হলেও এখানে স্বর্ণের কোনো স্থাপনা নেই তবে সোনালী রঙের কারণে এটি স্বর্ণ মন্দির নামে পরিচিত। এই মন্দিরটির নির্মাণ ব্যায় প্রায় ১০ কোটি টাকা। গৌতমবুদ্ধের সময়কালে এখানে একটি বৌদ্ধ মূর্তি স্থাপন করা হয়। দেশ বিদেশ থেকে বৌদ্ধরা এই মন্দিরটি দেখতে এবং এখানে প্রার্থনা করতে আসেন। বর্তমানে এই স্বর্ণ মন্দিরটি বান্দরবান জেলার অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে স্থান পেয়েছে।
বর্তমান আধুনিক স্থাপত্যের মধ্যে একটি উজ্জ্বল নিদর্শন। এই মন্দিরটি পূজারীদের জন্য সারাদিন খোলা রাখা হয়। বর্তমানে এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এখানে বছরের কিছু নির্দিষ্ট সময়ে মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
স্বর্ণ মন্দির যাওয়ার উপায়
বান্দরবান থেকে স্বর্ণ মন্দির যাওয়ার জন্য জিপ গাড়ি, চান্দের গাড়ি, এবং সিএনজি পাওয়া যায়। বান্দরবান জেলা থেকে স্বর্ণ মন্দির যাওয়া আসার জন্য ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা ভাড়া হয়ে থাকে। গাড়ি ভাড়া করে যাওয়ার সময় রাস্তায় ২০ বা ৩০ টাকা টোল দিতে হবে এবং স্বর্ণ মন্দিরে প্রবেশ করার জন্য ২০ টাকা দিয়ে প্রবেশ করতে হবে।
সাধারনত স্বর্ণ মন্দিরের আশেপাশের জায়গা গুলো ভ্রমন করার পর্যটকরা সিএনজি রিজার্ভ করে নে। গাড়ি রিজার্ভ করে নেওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে দরদাম করে নিতে হবে। কেননা আপনি কোন কোন জায়গা পরিদর্শন করবেন তার উপর ভাড়া নির্ভর করবে।
স্বর্ণ মন্দির ভ্রমণ টিপস
- বিকেলের সময়ে এই স্বর্ণ মন্দিরটি অসাধারণ রুপ ধারণ করে। মন্দিরের সোনালী রঙ ছড়িয়ে পরে চারিদিকে। তাই বিকেলের দিকে এই মন্দিরটি পরিদর্শন করার জন্য সঠিক সময়।
- সন্ধ্যা ৬ টার পর মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়না। তাই বিষয়টি মাথায় রেখে ৬ টার আগেই মন্দিরে যেতে হবে।
- শর্ট প্যান্ট অথবা লুঙ্গি পরিধান করে মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ তাই, বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
- মন্দিরের ভিতরে জুতা বা স্যান্ডেল পরে যাওয়া যায় না। তাই যাওয়ার আগে অবশ্যই এই বিশয়টি মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: ১৫ হাজার টাকার মধ্যে সেরা মোবাইল
আরও পড়ুন: ফ্রিল্যান্সিং কি? ফ্রিল্যান্সিং শেখার সম্পূর্ন গাইডলাইন
আরও পড়ুন: ছেলেদের মুখের কালো দাগ দূর করার উপায়
নাফাখুম
বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান নাফাখুম জলপ্রাত পানি প্রবাহের দিক থেকে বাংলাদেশের একটি অন্যতম বড় জলপ্রাত হিসেবে সুপরিচিত। বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রমাক্রি ইউনিয়নে অবস্থিত নাফাখুম জলপ্রাত। নাফাখুম জলপ্রাত দেখার জন্য সাঙ্গু নদী হয়ে রোমাক্রি হয়ে যেতে হয়। রোমাক্রি থেকে প্রায় তিন ঘন্টার মত পথা পায়ে হেটে অতিক্রম করার পর দেখা মেলে প্রকৃতির অনন্যরুপ নাফাখুম জলপ্রাতের।
রোমাক্রি খালের পানি বেয়ে এসে বাক খেয়ে প্রায় ২০ থেকে ৩০ ফুত নিচের দিকে নেমে এসে তৈরি হয়েছে এই জলপ্রাতের। দিনের বেলা সুর্যের তিব্র আলর আর পানীর দ্রুত গতির মাধ্যমে জলীয় বাষ্পের কারণে রংধনু প্রায় প্রতিদিনই এখানে খেলা করে। আপনি যদি অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষ হয়ে থাকেন এবং বান্দরবানের গহীনে সবুজের খেলা দেখতে চান তাহলে ঘুরে আসতে পারেন নাফাখুম।
নাফাখুম ভ্রমণের সময়কাল
সারা বছর অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষগুলো নাফাখুম জলপ্রাত দেখতে আসেন। আপনি যে কোনো সময় নাফাখুম দেখতে যেতে পারেন। কেননা সারা বছরই নাফাখুমের সঊন্দর্য বহাল থাকে। তবে বর্ষার সময় প্রায়ই সাঙ্গু নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে অতিক্রম করে। আর এ সময় প্রশাসন থেকে নাফাখুম জলপ্রাত ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয় না। অন্যদিকে শীতকালে নাফাখুমে পানি অনেকটাই কম থাকে যার কারণে আপনি নাফাখুমের প্রকৃত রুপ দেখতে পারবেন না। তাই বর্ষার পর এবং শীতকালের আগে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসই হলো নাফাখুম ভ্রমণের আদর্শ সময়কাল। তবে আপনি যে সময়ই নাফাখুম ভ্রমণ করেন না কেনো নাফাখুমের প্রকৃতি আপনার ভালো লাগবেই।
নাফাখুম ভ্রমনের উপায়
বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান নাফাখুম জলপ্রাত দেখার জন্য আপনাকে প্রথমে বান্দরবান জেলা সদরে আসতে হবে। এরপর বান্দরবান জেলা থেকে থানচি যেতে হবে। তারপর থানচি থেকে নৌকা নিয়ে সাঙ্গু নদী হয়ে রোমাক্রি বাজার যেতে হবে। সেখান থেকে পায়ে হেটে প্রায় ৩ ঘন্তা অতিক্রম করার পর দেখা মিলবে প্রকৃতির এই অপরুপ সৌন্দর্যের।
বান্দরবান থেকে থানচির দূরত্ব প্রায় ৭৯ কিলোমিটার। বান্দরবান থেকে দুইভাবে থানচি পৌঁছানো যায়। লোকাল বাস অথবা রিজার্ভ জিপে। বান্দরবান থেকে থানচির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতি ১ ঘন্টা পরপর বাস ছেড়ে যায়। বান্দরবান থেকে বাসে যেতে হলে জনপ্রতি ভাড়া ২০০ টাকা এবং সময় লাগতে পারে প্রায় ৪ থেকে ৫ ঘন্টা। রিজার্ভ জিপ বা চান্দের গাড়ি করে করে গাড়ি ভারা বাবদ খরচ হবে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত।
চান্দের গাড়ি বা জিপে করে থানচি পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৩ থেকে ৩ঃ৩০ মিনিট। থানচি যাওয়ার সময় পথে দেখা মিলবে মিলনছরি, চিম্বুক অ নীলগিরি। বান্দরবান থেকে থানচি যাওয়ার পথ আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে। কেননা চারপাশে অপুর্ব ল্যান্ডস্কেপ ভিউ দেখতে দেখতে সুদির্ঘ পাহাড়ি পথ আপনার মন অ চখ কে সতেজ করে রাখবে।
থানচি থেকে রোমাক্রি যেতে হলে অবশ্যই একজন গাইডের প্রয়োজন হবে। গাইড ছাড়া নাফাখুম ভ্রমণে যেতে পারবেন না। আপনি চাইলে উপজেলা প্রসাশন থেকে অনুমতি পাওয়া যে কাউকে গাইড হিসেবে বেছে নিতে পারেন। সাথে গিয়ে পরেরদিন থানচি ফিরে আসা পর্যন্ত গাইড ফি দিতে হয় ১৫০০ টাকা।
গাইড ঠিক হয়ে গেলে বিজিবি থেকে আপনাকে অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি নেয়ার সময় আপনাকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য হালনাগাদ করতে হবে। এসব কাজের ক্ষেত্রে গাইড আপনাকে সব ধরনের সাহায্য করবে। তবে মনে রাখা ভালো যে বিকাল ৩ টার পর থানচি থেকে রমাক্রি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় না। তাই রমাক্রি যাওয়ার জন্য অবশ্যোই আপনাকে দুপুর ২ টার মধ্যে থানচি তে উপস্থিত হতে হবে।
অনুমতি পাওয়ার পর থানচি ঘাট থেকে ছোট ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া করে রমাক্রি বাজার যেতে হবে। ছোট ইঞ্জিন চালিত এই নৌকায় সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৫ জন পর্যন্ত যেতে পারবেন। রমাক্রি যাওয়া এবং থানচি ফিরে আসার জন্য ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া খরচ হবে। অন্যদিকে গাইডের থাকা খাওয়া খরচ আপনাকে বহন করতে হবে।
সাধারনত একই দিনে বান্দরবান থেকে রওনা দিলে নাফাখুম যাওয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই অবশ্যই সময় নিয়েই নাফাখুম ভ্রমন করতে হবে। প্রেরদিন নাফাখুমে যেতে হলে আপনাকে রোমাক্রি থেকে নাফাখুমে যাওয়ার জন্য একজন স্থানীয় গাইড নিয়ে নিতে হবে। এর জন্য গাইড ফি ৫০০ টাকা দিতে হবে। রোমাক্রি বাজার থেকে রোমাক্রি খায় হয়ে হেটে হেটে প্রায় ২ থেকে ৩ ঘন্টা পথ অতিক্রম করার পরপই মিলবে এই নাফাখুম জলপ্রাত। এই জলপ্রাতে পৌছানোর আগে চোখে পড়বে আশেপাশের সৌন্দর্য এবং নাফাখুম জলপ্রাতের গর্জন। নাফাখুম বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান।
নাফাখুম ভ্রমন টিপস
- খরচ কমাতে হলে দলগত ভাবে ভ্রমন করুন এবং ছুটির দিন পরিহার করুন।
- বর্ষায় নাফাখুম ভ্রমনে গেলে লাইফ জ্যাকেট সাথেই রাখুন।
- নাফাখুমের পাথর অনেক পিচ্ছিল তাই সাবধানে হাটাচলা এবং ত্রেকিং এর সময় ভালো গ্রিপ জুতা ব্যবহার করুন।
- থানচির পর মোবাইল নেটওয়ার্ক তেমন কাজ করে না। থানচির পরে আর বিদ্যুৎ সংযগ পাওয়া যাবে না তাই মোবাইল ও ক্যামেরা ভালো করে চার্জ করে নিন। প্রয়জনে পাওয়ার ব্যাংক সাথে রাখুন।
- কোনোকিছু করার আগে গাইডের পরামর্শ নিন এবং এর পরামর্শ অনুযায়ী চলাফেরা করুন।
- সাথে পানির বোতল এবং ফাস্ট এইড বক্স রাখুন।
- ব্যাকপ্যাকে কম ওজনের জিনিস বহন করুন। যত কম ওজনের জিনিস ব্যভয়ার করবেন ততই ভালো।
- আদিবাসীদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন।
আরও পড়ুন: অশ্বগন্ধার উপকারিতা ও অপকারিতা
আরও পড়ুন: লিভার ভালো রাখার উপায়
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিন ভ্রমণ গাইড – যাতায়াত, থাকা-খাওয়া খরচ। St. Martin’s Island
আমাদের শেষকথা
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান গুলোর মধ্যে নাফাখুম, নীলগিরি, নীলাচল এবং স্বর্নমন্দির ভ্রমনের খরচ, যাতায়াত, এবং সেখানকার প্রকৃতি আপনাদের সামনে তুলে ধরেছি। আমরা আসা করি যে আপনারা এই জায়গা গুলো ভ্রমণের সময় বিভিন্ন নির্দেশনা গুলো মেনে চলবেন এবং অপূর্ব সুন্দর প্রকৃতি গুলো উপোভগ করবেন।
আমাদের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা ভ্রমন টিপস ও গাইড, স্বাস্থ টিপস, টেকনলজি, রিভিউ, মোবাইল, কম্পিউটার টিপস ও ট্রিকস সম্পর্কিত আর্টিকেল গুলো পাবলিশ করে থাকি। আমাদের এই ব্লগটি ঘুরে দেখার আমন্ত্রন রইলো।