নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি

আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে শেয়ার করবো নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি সম্পর্কে। বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন এর লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যকে সহজ করার জন্য অনলাইনের মাধ্যমে আপনি নতুন মিটারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আগে নতুন মিটারের জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে অফিসে গিয়ে কাগজপত্র জমা দিতে হত, টাকা জমা দিয়ে সম্পূর্ণ কাজ প্রক্রিয়া শেষ করতে অনেক সময় লাগতো। কিন্তু বর্তমানের অনলাইনে আবেদন করার মাধ্যমে খুব কম সময়ে আপনি নতুন মিটারের জন্য আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন। আবেদন করার জন্য যে প্রক্রিয়ায় এবং যে কাগজপত্র প্রয়োজন সেই বিষয়ে সুন্দর ভাবে আলোচনা করা হচ্ছে।

নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি

নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন

নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদনে এর প্রয়োজনীয় কাগজপএ

  • আবেদন করার সময় ছবি, জাতীয় পরিচয় পত্র ও সংযোগস্থলের খারিজের স্ক্যান কপি সংযুক্ত করতে হবে।
  • সার্ভিস ড্রপের দুরত্ব (সংযোগস্থল হইতে সার্ভিস পোলের দুরত্ব)১৩০ ফুটের মধ্যে হতে হবে।
  • সঠিক ভাবে মেপে সার্ভিস ড্রপের দুরত্ব প্রদান করুন। সার্ভিস ড্রপের দুরত্ব সঠিক না হলে তারের দৈর্ঘ্য কম/বেশি পারে। ভুল তথ্য দিলে পরবর্তীতে সংযোগ পেতে বিলম্ব হতে পারে।
  • মোট লোড ৮০ কিলোওয়াট এর বেশি হলে এইচটি সংযোগের নিয়মাবলী প্রযোজ্য হবে।
  • অনলাইনে সার্ভে করার পর প্রয়োজনীয় অর্থ (আবেদন ফি, মেম্বারশীপ ফি ও নিরাপত্তা জামানত) জমাদানসহ সকল নির্দেশনা এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে।
  • আবেদন ফরমের লাল(*) চিহ্নিত ক্ষেত্রগুলো অবশ্যই পূরন করতে হবে।
  • আবেদন পত্রে গ্রাহকের নিজস্ব মোবাইল নম্বর প্রদান করুন।
  • আবেদনের পর প্রাপ্ত ট্র্যাকিং আইডি এবং পিন নম্বর অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।
  • সংযোগের অর্থ ডাচবাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং (রকেট) এর মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে।
  • ডাচবাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ফি পরিশোধ করার জন্য নিচে নিয়মাবলী দেখে নিন।

ডাচবাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ফি পরিশোধ করার পদ্ধতিঃ

নতুন মিটারের জন্য আবেদন পদ্ধতি খুবই সহজ অনলাইনের মাধ্যমে। আবেদন এর প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার ৩০ দিনের ভিতরে আপনার বাসায় বিদ্যুৎ সংযোগ পাবেন। কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করবেন নতুন মিটারের জন্য সেই প্রক্রিয়া আলোচনা করা হচ্ছে।

প্রথমে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে ব্রাউজার এ প্রবেশ করুন। আঞ্চলিক পল্লী বিদ্যুৎ এই লেখার সাথে আপনি যে অঞ্চলে বাস করেন সেই অঞ্চলের নাম সাথে দিয়ে সার্চ দিবেন। উদাহরণস্বরূপ, ” আঞ্চলিক পল্লী বিদ্যুৎ ভোলা “ লিখে সার্চ দিবেন।

তাহলে আপনি যে অঞ্চলে বাস করেন সেই অঞ্চলের পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে ওয়েবসাইটটি খুব সহজেই খুজে পাবেন। ওয়েবসাইট টি তে ক্লিক করুন।

তারপর একটু নিচের দিকে নেমে ডান পাশে দেখতে পারবেন অনলাইনে আবেদন নামে একটি বাটন রয়েছে সেখানে ক্লিক করুন।

ক্লিক করার পর আপনাকে অন্য একটি ওয়েবসাইটে নিয়ে যাওয়া হবে। এখানে আপনি আবেদন লেখা দেখতে পারবেন সেখানে ক্লিক করুন।

তাহলে এরকম একটি পেজ দেখতে পাবেন এখানে আপনার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিতে হবে। প্রথমে আপনি দেখতে পারবেন বিদ্যুৎ অফিসের বিবরণ। সেখানে আপনার সমিতির নাম দিতে হবে। আপনি যে অঞ্চলে বসবাস করেন সে অঞ্চলের বিদ্যুৎ সমিতির নাম তারপর জোনাল অফিসের নাম সিলেক্ট করুন।

তারপর সংযোগের ট্যারিফ সিলেক্ট করতে হবে। আপনি বাণিজ্যিক, অস্থায়ী, আবাসিক কিনা এরকম হিসেব করে আপনাকে সংযোগের ট্যারিফ সিলেক্ট করতে হবে।

এরপর আবেদনকারী বিবরণ দিতে হবে। যেমন আবেদনকারীর নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, স্বামী/ স্ত্রীর নাম, জন্মতারিখ, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, মোবাইল নম্বর, ই-মেই,ল টিন সার্টিফিকেট, জাতীয়তা, মোবাইল নাম্বার এই তথ্যগুলি সঠিকভাবে পূরণ করবেন।

আপনার স্থায়ী ঠিকানা জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, ডাকঘর, পোস্ট কোড, গ্রাম, বাড়ির নাম এগুলি সঠিকভাবে বসাতে হবে।

আপনি যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে চাচ্ছেন সেই স্থানের তথ্য গুলি পূরণ করতে হবে। জেলা, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন, ডাকঘর, পোস্ট কোড, গ্রাম, বাড়ির নাম, মৌজা, দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর। জমির মালিকানা ধরন সিলেক্ট করতে হবে। জমির আইনগত মালিক লিখুন।

এখন আপনাকে জিওগ্রাফিক তথ্য দিতে হবে। বিঃ দ্রঃ- নিকটবতী সার্ভিস পোল হইতে সংযোগস্থলের দূরত্বের উপর নির্ভর করে সংযোগ তারের দৈর্ঘ্য নির্ধারিত হবে। দুরত্ব বেশি হলে প্রয়োজনে নতুন খুঁটি ও লাইন নির্মাণ করা হবে। অনলাইন সার্ভে করে দুরত্ব ভুল পেলে সংযোগ পেতে বিলম্ব হতে পারে । মিথ্যা তথ্যের জন্য অনাকাংখিত দুর্ঘটনা ঘটলে আপনি নিজেই দায়ী থাকবেন । প্রয়োজনে তদন্ত করা হবে।

আপনাকে কানেকশন এর বিবরণ দিতে হবে যেমন স্থায়ী সংযোগ, অস্থায়ী সংযোগ, সাময়িক সংযোগ ।

এখন আপনাকে লোড এর বিবরণ দিতে হবে। যেমন আপনার বাসা বা অফিস এর এখানে কি কি ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি আছে যেমন লাইট, টেলিভিশন, ফ্রীজ, কুকার ইত্যাদি প্রত্যেকটি আইটেমের নাম, আইটেম সংখ্যা, লোড, মোট কতগুলি এখানে উল্লেখ করতে হবে।

চাহিদাকৃত লোড এর বিবরণ গুলি দিতে হবে। মোট লোড(কিঃওঃ), ফেইজ, এক ফেইজ, ভোল্ট উল্লেখ করতে হবে।

বাড়ি অথবা প্রতিষ্ঠানের লোকেশন এবং মন্তব্য এখানে বাংলায় লিখতে হবে।

এখন আপনার ছবি, জাতীয় পরিচয় পত্র এবং খারিজ আপলোড করতে হবে। কত সাইজের এগুলো আপলোড করতে হবে তার বিবরণ ডানপাশের দেওয়া রয়েছে। তারপর আপনাকে বক্স এ টিক দিয়ে তাদের শর্তসমূহের সাথে একমত হতে হবে।

তারপর নিচে দেখতে পাবেন কিছু সিকিউরিটি ক্যাপচা কোড। কোড গুলি সঠিকভাবে পূরণ করুন। তারপর সংরক্ষণ করুন বাটনে ক্লিক করতে হবে।

নতুন মিটারের জন্য আবেদন ফি

বাড়ি,বাণিজ্যিক,দাতব্য প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন বিদ্যুৎ মিটারের আবেদন ফি হলো ১০০ – ২০০০ টাকা সমীক্ষা ফি জমা করতে হবে। সেচ সংযোগ এর মিটারের জন্য আবেদন এর সাথে ২৫০ টাকা সমীক্ষা ফি জমা দিতে হবে।

আরও পড়ুন: হানিফ পরিবহন অনলাইন টিকিট, কাউন্টার ও মোবাইল নাম্বার

আরও পড়ুন: অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম ২০২২

আরও পড়ুন: ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কতদিন আগে পাওয়া যায় ২০২২

আমাদের শেষকথা 

আজকে আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনার সাথে শেয়ার করেছি  নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আশা করি এর মাধ্যমে আপনি উপকৃত হবেন।

আমাদের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত তথ্যবহুল আর্টিকেল পাসপোর্ট, ভোটার আইডি কার্ড, টেকনোলজি,  কম্পিউটার, মোবাইল, ভ্রমণ, ইত্যাদি সম্পর্কিত বিভিন্ন আর্টিকেল পাবলিশ করে আসছি। আশা করি আপনারা আমাদের এই ব্লগটি পছন্দ করবেন।