ওজন বাড়বে কিভাবে

ওজন বাড়বে কিভাবে বা কিভাবে ওজন বাড়ানো যায় এ নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তা করে থাকেন। আবার আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যারা কিনা কম ওজনের ও হালকা পাতলা শরীর নিয়ে দুর্ভাবনায় থাকেন। তাই আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ওজন বাড়বে কিভাবে, বা কিভাবে আপনি আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে পারবেন।

আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা চান যে, ওজন বাড়িয়ে সুগঠিত শরীর তৈরি করতে। ওজন বাড়াতে হলে আপনার ডেইলি রুটিনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। নিয়ম করে শারীরিক ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাস হলো একমাত্র উপায় শরীরের সঙ্গে ভারসম্যপুর্ন সঠিক ওজন রাখতে। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক ওজন বাড়বে কিভাবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত।

ওজন বৃদ্ধি করার উপায়

ওজন বাড়বে কিভাবে
ওজন বাড়বে কিভাবে

ওজন হ্রাস পাওয়ার প্রধান কারণ হলো কম কম খাবার খাওয়া, অকারণে দুশ্চিন্তা এবং অনিদ্রা। ওজন বাড়াতে হলে স্বাভাবিক খাবারের পরিমাণের থেকে বাড়িয়ে খাবার খেতে হবে। ওজন বৃদ্ধি করতে হলে অবশ্যই স্বাভাবিক খাবারের চার ভাগের এক ভাগ বাড়িয়ে খেতে হবে এবং নিয়মিত এভাবে বাড়িয়ে বাড়িয়ে খেতে হবে। অবশ্যই সময় মতো খাবার খেতে হবে।  তবে মনে রাখতে হবে যে, একেবারে অতিরিক্ত খাবার খাওয়া যাবে না। অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ফলে শরীরে নানান রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ওজন হ্রাস পাওয়ার প্রধান কারণ হলো দুশ্চিন্তা এবং অনিদ্রা। সঠিকভাবে ওজন বৃদ্ধি করতে হলে খাবারের পাশাপাশি সঠিকভাবে ঘুমাতে হবে এবং দুশ্চিন্তা করা যাবে না। অকারণে রাত জেগে থাকা এক ধরনের বদ অভ্যাস। এ ধরনের অভ্যাস থাকলে তা পরিবর্তন করতে হবে।

ওজন বাড়বে কিভাবে

ওজন বাড়াতে হলে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন, অনিদ্রা ও ও দুশ্চিন্তা ত্যাগ করতে হবে। ভিটামিন, ক্যালোরি যুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। ক্ষুধা বাড়াতে হবে। ক্ষুধা বাড়ানোর জন্য প্রয়োজন শারীরিক ব্যায়াম। ব্যায়াম করার ফলে শরীরের গঠন ঠিক হয় এবং ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। চলুন এবার আমরা ওজন বাড়বে কিভাবে সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানার চেষ্টা করি।

ওজন বাড়াতে সকালে যেসব খাবার খাওয়া দরকার

ওজন বৃদ্ধি করতে সকাল বেলা বাদাম, খেজুর ও কিসমিস বেশ উপকারী। বাদাম, খেজুর ও কিসমিসে প্রচুর ক্যালরি থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এছাড়া এসব খাবার ওজন বৃদ্ধি করতে বেশ উপকারী। তাই আপনার সকাল শুরু করতে পারেন এসব খাবার দিয়ে।

উচ্চ ক্যালরি যুক্ত খাবার খাওয়া

ওজন বৃদ্ধি করতে বেশি বেশি ক্যালরি যুক্ত খাবার খাওয়া উচিৎ। যেমন, ডিম, খেজুর, কলা, দুধ, কিসমিস, মিষ্টি জাতীয় খাবার, ঘি, মাখন, পনির, কোমল পানীয়, আলু, ইত্যাদি খাবার গুলোতে অনেক বেশি পরিমাণ ক্যালরি থাকে। যা আমাদের দেহের পুষ্টি হীনতার অভাব দূর করে। তাই প্রতি বেলার খাবার তালিকায় এসব খাবার রাখার চেষ্টা করুন। এসব খাবার সেবনের ফলে শরীরের ক্যালরির ঘাটতি দূর হয়। যার ফলে আমাদের দেহের ওজন বৃদ্ধি হতে থাকে।

দেহের ওজন বাড়াতে শাক সবজি ও ফল

শাক সবজি দেহের ওজন কমাতে সাহায্য করে আবার একইভাবে শাক সবজি দেহের ওজন বৃদ্ধি করতেও অনেক সাহায্য করবে। কেননা এমন অনেক শাক সবজি ও ফলমূল রয়েছে যেখানে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। যেমন, আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, গাজর, কাঁচা কলা, টমেটো, আলু ইত্যাদি। এ সকল খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে। এসব সবজি খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকে তেমনি একইভাবে ওজন বৃদ্ধি করতেও দারুণ ভূমিকা পালন করে।

বেশি বেশি খাবার খাওয়া

পরিমাণ মত খাবার না খাওয়ার ফলে আমাদের দেহে খাদ্য ঘাটতির দেখা দিতে পারে। যার ফলে ওজন বাড়ার বদলে উলটো কমে যেতেও পারে। তাই ওজন বাড়াতে হলে পরিমাণ মত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি বেশি বেশি খাবার খেতে হবে।

ওজন বাড়াতে হলে নিয়ম মতো পেট ভরে খেতে হবে। পেটে ক্ষুধা রাখা যাবে না। ক্ষুধা লাগা মাত্র খেতে হবে। খাবারে অনিয়ম করলে শরীর খারাপ হতে পারে এবং ওজন হ্রাস পেতে পারে। অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার বদলে নিয়ম করে ক্ষুধা পেলে খাবার খেতে হবে।

সারাদিনে আমরা নানান ধরনের কাজ কর্ম করে থাকি যার ফলে আমাদের সরির অনেক ক্লান্ত হয়। শরীর ক্লান্ত হলে ক্ষুধা বাড়ে এটা ঠিক। তবে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করতে এবং শরীরে পানির অভাবে পূরণ করতে বেশি বেশি পানি খেতে হবে।

বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া

ওজন বৃদ্ধি করতে হলে যা খুশি তা খাওয়া যাবে না। এতে হিতের বিপরীত ও হতে পারে। এমনকি আপনি অসুস্থ হতে পারেন। ওজন বৃদ্ধি করতে খাবারে যথাযথ প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট থাকতে হবে। ওজন বাড়ানো এবং শরীরের গঠন ঠিক রাখতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে হবে। প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে হলে দুধ, ডিম, মাছ, মাংস ইত্যাদি প্রোটিন যুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে।

ওজন বৃদ্ধি করতে রাতের খাবার

ওজন বৃদ্ধি করতে হলে আমাদের কে অবশ্যই রাতে সময়মত পেট ভরে পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। রাতের খাবার খাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব আমাদের কে ঘুমিয়ে পড়তে হবে। রাতে খাওয়ার পর তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়লে ক্যালরি কম খরচ হয় এবং আমাদের দেহে বাড়তি ওজন হিসেবে জমা হয়ে থাকে।

দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস দুধের সাথে এক চামচ পরিমাণ মধু মিশিয়ে খেলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে অনেক সহায়তা করবে।

আরও পড়ুন: এলার্জি দূর করার উপায়

আরও পড়ুন: দারুচিনির উপকারিতা ও অপকারিতা

আরও পড়ুন: মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা

ওজন বাড়াতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে। এছাড়া দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে। খাদ্যাভ্যাস ও শরীর চর্চার পাশাপাশি অবশ্যই আপনাকে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। দৈনিক ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম এবং অন্যান্য বিষয়গুলো মেনে চলার পর আশা করা যায় যে আপনার ওজন দ্রুত বৃদ্ধি হবে। সঠিকভাবে ঘুমাতে হলে দুশ্চিন্তা করা যাবে না। এমন কোনও আজ করা যাবে না কাজ ব্রেনের উপর চাপ পড়ে। দুশ্চিন্তার কারণে আপনার ওজন হ্রাস পাওয়া তুলনামূলক ভাবে অনেকখানি বেড়ে যেতে পারে।

সুস্থ থাকতে, ভালো খাবার, ঘুম এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা অনেক জরুরি। সবসময় হাসিখুশি ও সুন্দর জীবন যাপন করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এতে শরীর ও মন ভালো থাকে। শরীর ও স্বাস্থ্য কে ভালো রাকার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত ঘুম, আহার, বিশ্রাম এবং পরিশ্রম করা প্রয়োজন।

আমাদের শেষকথা

আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি ওজন বাড়বে কিভাবে। এছাড়া ওজন বৃদ্ধি করার কিছু সহজ কৌশল আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। উপরোক্ত তথ্যের ভিত্তিতে সঠিকভাবে পরিশ্রম করলে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি হবে বলে আশা করা যায়। আসা করি এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগেছে এবং আমাদের ব্লগটি আপনি পছন্দ করেছেন।

আমাদের এই ব্লগে আমরা নিয়মিত স্বাস্থ্য টিপস, ভ্রমণ, টেকনোলজি, কম্পিউটার, রিভিউ, মোবাইল, বিভিন্ন টিপস বিষয়ক আর্টিকেল পাবলিশ করে যাচ্ছি। আগামী দিনেও আমাদের এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।