আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো চুল স্ট্রেইট করার নিয়ম সম্পর্কে। চুল মানুষের সৌন্দর্য বহন করে। এমন মানুষ খুঁজেপাওয়া কঠিন যে কিনা চায়না যে, তার চুল সুন্দর এবং সিল্কি হোক। কিন্ত অনেকেরই চুল স্ট্রেইট না। শীতকাল এমন একতা সময় যে তখন কমবেশি সবার চুল বেশিরভাগ সময় অস্বাভাবিক থেকে যায়। যার ফলে অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতের সময়ে চুল কে ভালো রাখতে হলে একটু বেশী যত্ন নিতে হয়। এছাড়া শীতের সময়ে অতিরিক্ত চুল পড়ে এবং খুসকির পরিমান অনেকখানি বেড়ে যায়। যার ফলে আমাদের চুল হয়ে যায় অনেক পাতলা এবং উস্কখুস্ক।
চুল স্ট্রেইট করা যেন এখন ফ্যাশনের একটা অনন্য ধাপ। সবাই কমবেশি চায় যে তাদের চুল সিল্কি ও স্ট্রেইট হোক। কেননা চুল স্ট্রেইট ও সিল্কি হলে দেখতে সুন্দর লাগে। এছাড়া অনেকেই আছে যারা কিনা শুধুমাত্র চুল স্ট্রেইট করার জন্য অনেক টাকা খরচ করে থাকে। এই আর্টিকেলের মাধ্যমে চুল স্ট্রেইট করার ঘরোয়া পদ্ধতি ছাড়াও আরও বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হবে।
চুল স্ট্রেইট করার নিয়ম
ক্যামিক্যাল বা ক্রিম ব্যবহার করেও চুল স্ট্রেইট করা যায়। কিন্তু ক্যামিকেল বা ক্রিম ব্যবহার করে চুল স্ট্রেইট করা গেলেও কয়েদিন পর আবার চুল আগের মতো হয়ে যায়। একইসাথে চুল পড়া থেকে শুরু করে নানান রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সহজ এবং স্বাভাবিক উপায়ে আপনি বাড়িতে বসেই চুল স্ট্রেইট করতে পারবেন।
প্রাকৃতিক ভাবেই অনেকের চুল স্ট্রেইট হয় না। কারো কারো চুল কোকড়া হয় আবার, কারো চুল হয় হালকা সোজা। ওনেকেই চুল সোজা করার জন্য রিবন্ডিং, হেয়ার স্ত্রেইনিং সহ বিভিন্ন কাজ করান।কিন্তু এর ফলে চুল মারাত্নকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যায়। অন্যদিকে এর জন্য প্রচুর অর্থ ব্যায় করতে হয়। যেখানে ঘরোয়া পদ্ধতি তে চুল স্ট্রেইট করার উপায় এবং অনেক কম খরচে প্রাকৃতিক ভাবে সহজেই চুল কে সোজা করা সম্ভব।
ঘরোয়া পদ্ধতি তে চুল স্ট্রেইট করার উপায়
ঘরোয়া পদ্ধতি তে বিভিন্ন ভাবে চুল স্ট্রেইট করা যায়। চলুন স্ট্রেইট করার ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো সম্পর্কে জানা যাক।
পদ্ধতি ১ঃ এই পদ্ধতিতে আমাদের কে একতি বিশেষ ধরনের প্যাক তঈরি করে নিতে হবে। যার জন্য আমাদের বেশ কিছু উপকরনের দরকার হবে। চলুন এবার আমরা জেনে নেই কিভাবে এই প্যাকটি তৈরি করা যাবে এবং কি কি উপকরনের প্রয়োজন হবে প্যাকটি তৈরি করতে।
প্রয়োজনীয় উপকরনঃ ২ টি কলা, ২ চা চামচ মধু, ২ চা মচ অলিভ অয়েল, ১ চামচ পরিমান টক দই।
প্যাকটি তৈরি করা জন্য প্রথমে সবগুল উপকরণ একসাথে মিশিয়ে ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। একপর প্যাকটি তৈরী হয়ে গেলে চুলের গোড়া থেকে শুরু করে আগা পর্যন্ত ভালোভাবে লাগিয়ে কমপক্ষে ৩০ মিনিটের মতো সময় অপেক্ষা করতে হবে।
এরপর রেগুলার শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। ভালো ফলাফল পাওয়ার জন্য প্রতি সাপ্তাহে ৩ বার এই প্যাকটি ব্যবহার করতে হবে।
পদ্ধতি ২ঃ হট অয়েল চুলে মাসাজ করলে যে, অনেক ভালো উপকার পাওয়া যায় এ সম্পর্কে হয়তো আপনারা অনেকেই জানেন। তবে হয়ত অনেকেই জানেন না যে, হট অয়েল মাসাজে চুল সোজা করা যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে হট অয়েল মাসাজ করে চুল স্ট্রেইট করা যায়।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ নারকেল, অলিভ, তিল অথবা বাদাম অথবা মাথায় ব্যবহার করা যায় এমন যে কোনো তেল।
মাথায় ব্যবহার করা তেল হালকা করে গরম গরম করে নিয়ে চুলে গোড়া থেকে আগা অব্ধি ভালোভাবে লাগিয়ে ২০ মিনিট ধরে ভালো করে মাসাজ করতে হবে। এরপর চিরুনি ব্যবহার করে চুল আচড়ে স্টিম করে গরম করা তোয়ালা দিয়ে কমপক্ষে ৩০ মিনিট মাথা ঢেকে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পর স্যাম্পু ব্যবহার করে ভালোভাবে মাথা ধুয়ে ফেলতে হবে।
তারপর আবার চিরুনি ব্যবহার করে চুল আচরাতে হবে। এরপর ফলাফলে আপনি নিজেই দেখতে পারবেন। ভালো ফলাফল পেতে হলে প্রতি সাপ্তাহে কমপক্ষে একবার এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন চুলকে সোজা এবং মজবুত করার জন্য।
চুল স্ট্রেইট করার নিয়ম পদ্ধতি ৩ঃ মুখ পরিষ্কার রাখতে দুধের ব্যবহার হয়ত আপনারা শুনে থাকবেন। কিন্তু আপনারা হয়তো জানেন না যে, চুলকে মশ্চেরাইজ বা সোজা করতে দুধ অনেক কার্যকরী। চলুন জেনে নেওয়া যাক চুল স্ট্রেইট করতে দুধের ব্যবহার সম্পর্কে।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ হাফ কাপ দুধ, হাফ কাপ পানি, স্প্রে বোতল।
পানি ও দুধ একসাথে মিশিয়ে স্প্রে বোতলে ভরে নিতে হবে। এরপর খেয়াল রাখতে হবে যে চুলে যেন কোনো ধরণের জট না থাকে। তারপর চুলের উপর পানি ও দুধের মিশ্রন টি দিয়ে ভালোভাবে স্প্রে করে নিতে হবে। তারপর চিরুনি ব্যবহার করে ভালো করে চুল আচরে নিতে হবে। আচরানোর পর কমপক্ষে ৩০ মিনিট চুল কে খোলা অবস্থায় রাখতে হবে। তারপর শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে আবার চুল আচরে নিতে হবে। এভাবে প্রতি সাপ্তাহে তিন বার ব্যবহার করলে দেখা যাবে যে অল্প সময়ের মধ্যেই চুল সোজা হয়ে যাচ্ছে।
পদ্ধতি ৪ঃ চুলের যত্নে অ্যালোভেরার গুরুত্ব অনেক। অ্যালোভেরাতে প্রচুর এনজাইম থাকে। যা চুলকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং চুলকে মসচেরাইজ ও স্মুথ করে। চলুন জেনে নেই চুল সোজা করতে অ্যালোভেরার ব্যবহার সম্পর্কে।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ হাফ কাপ অ্যালোভেরার রস, হাফ কাপ গরম অলিভ অয়েল।
অ্যালোভেরার রস ও গরম অলিভ অয়েল একসাথে মিশিয়ে চুলের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত ব্যবহার করতে হবে। এরপর শাওয়ার ক্যাপ ব্যবহার করে কমপক্ষে ২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে। এরপর শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। তারপর চিরুনি ব্যবহার করে চুল আচরে নিলে লক্ষ্য করতে পারবেন ফলাফল।
চুল স্ট্রেইট করার নিয়ম পদ্ধতি ৫ঃ আপনি হয়তো চুলে ডিমের ব্যবহার এর কথা শুনে থাকবেন। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে ডিম ব্যবহার করেও চুল সোজা করা সম্ভব। চলুন বিস্তারিত তথ্য জেনে নেই।
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ ২ টি ডিম, ৪ চামচ পরিমাণ অলিভ অয়েল।
ডিম ভালোভাবে ফাটিয়ে ডিমের সাথে অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর মিশ্রন টি ভালোভাবে মাথায় মাখিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। তারপর শ্যাম্পু করে ভালোভাবে মাথা আচরে ফলাফল দেখুন। চুল স্ট্রেইট করতে প্রতি সপ্তাহে একবার এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটি দর্শনীয় স্থান সমূহ
আরও পড়ুন: শাওমি মোবাইল দাম বাংলাদেশ ২০২২
শেষকথা
চুল স্ট্রেইট করার নিয়ম সম্পর্কে আমরা আজকের এই ব্লগ পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। তবে মনে রাখতে হবে যে আমরা আজকের এই ব্লগ পোস্টে যে পদ্ধতি গুলো নিয়ে আলচনা করেছি। এগুলো যদি আপনি একদিন এপ্লাই করে আর না করেন সেক্ষেত্রে আপনারা ভালো ফলাফল পাবেন না। ভালো ফলাফলের জন্য আপনাদের কে নিয়মিত এই পদ্ধতি গুলো এপ্লাই করতে হবে। প্রতি সাপ্তাহে অন্তত একবার এই পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করুন । এতে করে আপনারা সেরা ও ভালো ফলাফল আশা করতে পারেন। আপনি যদি আরও ফলাফল পেতে চান তাহলে সাপ্তাহে অন্তত দুইবার টানা এক বা দুই মাস ব্যবহার করুন।
এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা নিয়মিত টেকনোলজি, রিভিউ কম্পিউটার, মোবাইল টিপস, ভ্রমন, স্বাস্থ্য টিপস বিষয়ক বিভিন্ন আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি। আমাদের এই ধারা আগামী দিনেও অব্যহত থাকবে বলে আমরা আশাবাদী। আশা করি এই ব্লগটি আপনারা পছন্দ করবেন।