জমির মালিকানা বের করার উপায় সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। সঠিক নিয়ম না জানার কারণে অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য বিভিন্ন জায়গাতে দৌড়াদৌড়ি করে থাকে। কিন্ত, সঠিক নিয়ম জানা থাকলে আপনি ঘরে বসেই জমির মালিকানা যাচাই করতে পারবেন। আজকের এই আর্টিকেল টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো এমন কিছু কৌশল সমন্ধে, যে কৌশল গুলো সম্পর্কে জানা থাকলে আপনি ঘরে বসেই যে কোনো জমির মালিকানা যাচাই করতে পারবেন। আপনি যদি জমির মালিকানা বের করার উপায় সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই আর্টিকেল টি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
জমির মালিকানা বের করার উপায়

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের সসমাজতন্ত্র ব্যবস্থা খুবই উন্নত হয়েছে। এখন ঘরে বসেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে অনেক কাজ করা সম্ভব। এছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে এসব কাজ সম্পন্ন করার ফলে অনেকখানি সময় এবং পরিশ্রম বাচানো সম্ভব হয়ে উঠেছে। কেননা আগে আমাদের কে জমির মালিকের নাম যাচাই করার জন্য ভূমি অফিস সহ বিভিন্ন যায়গায় হয়রানি হতে হতো। একইসাথে অপচয় হতো অনেক সময়। কিন্তু বর্তমানে ইন্টারনেট ভিত্তিক হওয়ার ফলে এখন সহজেই এ সকল কিছুর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই।
যেমন বিভিন্ন ধরনের খতিয়ান কপি বা নামজারি খতিয়ান কপি গুলো এখন সহজেই সংগ্রহ করা যায়। এছাড়া অনলাইনের মাধ্যমে সঠিক কাগজপত্র দাস্তাখাত করা যায় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রিন্ট ও করা যায়। যা পূর্বে এসব কাগজের জন্য করতে হতো অনেক দৌড়াদৌড়ি এবং ভূমি অফিসে বারংবার যাওয়া আসা করতে হতো। কিন্তু অনলাইন ভিত্তিক হওয়ার ফলে এখন অনেকখানি কম সময়ে প্রয়োজনীয় কাগগুলো হাতে পাওয়া যায় মুহুর্তের মাঝেই এবং হতে হয়না হয়রানির স্বীকার।
অনলাইনে জমির মালিকানা বের করার উপায়
এই মুহুর্তে আমি মনে করছি যে, আপনি একটি জমি ক্রয় করতে চাচ্ছেন এবং জমির মালিকের সাথে আপনার কথা ও হয়েছে। কিন্তু আপনি সেই জমির আসল মালিক কে সেটি সম্পর্কে জানতে চাইছেন। আর ঠিক এই মুহুর্তে আপনি যদি না জানেন যে অনলাইনের মাধ্যমেও ঘরে বসে থেকেই জমির মালিকানা বের উপায় সম্পর্কে। তাহলে আপনাকে হয়তো অনেক সময় এবং পরিশ্রম করে ভূমি অফিসে যেতে হবে সেই জমির মালিক কে তা যাচাই করার জন্য।
তবে আপনি কিন্তু চাইলে ঘরে বসেই সেই জমির মালিকানা যাচাই করে ফেলতে পারবেন। আর এ বিষয়টি যদি আপনার জানা থাকে তাহলে আপনি যে কোনো জমির মালিকানা যাচাই করতে পারবেন। জমির মালিকানা যাচাই করার জন্য অবশ্যই জমির খতিয়ান ও দাগ নাম্বার এর প্রয়োজন হবে। খতিয়ান নাম্বার এবং দাগ নাম্বার দিয়ে খুব সহজেই আপনি অনলাইন থেকেই জমির মালিকানা বের করতে পারবেন। চলুন তাহলে মূল আলোচনায় ফিরে যাওয়া যাক এবং জেনে নেওয়া যাক কিভাবে জমির মালিকানা বের করতে হয়।

অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে জমির মালিকানা বের করার জন্য প্রথমে, আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার এর যে কোনো একটি ব্রাউজার চালু করুন এবং সার্চ বারে গিয়ে টাইপ করুন land.gov.bd এবং সার্চ করুন। সার্চ করার পর আপনার সামনে যে ফলাফল গুলো দেখতে পারবেন সেখান থেকে সবর প্রথমের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পরে ডিজিটাল ল্যান্ড রেকর্ড নামের এওটি অপশন পেয়ে যাবেন সেখানে ক্লিক করুন।
এখানে ক্লিক করার পর আপনাকে অন্য একটি ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে। যেখানে খতিয়ান, মৌজা, অনলাইন উন্নয়ন কর সহ বেশ কিছু অপশন পাওয়া যাবে। এখান থেকে আপনাকে খতিয়ান অপশন টি নির্বাচন করতে হবে। খতিয়ান অপশনে আসার পর নিচের ছবির মতো আপনার সামনে একটি পেজ দেখা যাবে
নোট: আপনি যদি খতিয়ান নামক অপশনে ক্লিক করেন তাহলে পরবর্তী তে আরএস খতিয়ান নির্বাচন করতে হবে। অন্যথায় আপনি যদি সরাসরি আরএস খতিয়ানে ক্লিক করেন তাহলে কোনো কিছু নির্বাচন করতে হবে না।
আপনি যখন আরএস খতিয়ান অপশনে আসবেন তখন আপনাকে আপনার বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং মৌজার নাম নির্বাচন করতে হবে। সঠিকভাবে এসবকিছু নির্বাচন করা হয়ে গেলে পরবর্তী তে আপনাকে আরও ৪ টি নতুন অপশন দেওয়া হবে এবং এখান থেকে ঐচ্ছিকভাবে আপনাকে যে কোনো একটি অংশ আপনাকে পূরণ করার জন্য বলা হবে।
অর্থাৎ এখনে আপনি যখন আরএস খতিয়ান সম্পর্কে জানার জন্য চেষ্ঠা করবেন তখন আপনাকে খতিয়ান বা দাগ নাম্বার দিয়ে দেখতে হবে। আর যখন আপনি যে কোনো একটির তথ্য দিয়ে পরবর্তী ধাপের জন্য এগিয়ে যাবেন তখন, আপনাকে ক্যাপচা পূরণ করার জন্য বলা হবে। সঠিকভাবে ক্যাপচা টি পূরণ করুন। এবং পরবর্তী ধাপের জন্য এগিয়ে যান। সঠিকভাবে সকল কিছু পূরণ করার পর আপনাকে অনুসন্ধান বাটনে প্রেস করতে হবে।
সঠিকভাবে সকল কিছু সম্পন্ন করতে পারলে কিছুক্ষণের মধ্যে খতিয়ান কার নামে আছে বা জমির বর্তমান মালিকের নাম দেখতে পারবেন। একই সাথে ঐ একই দাগে কতজন মালিক রয়েছে তাদের নাম সহ অন্যান্য তথ্য দেখতে পারবেন। এভাবে অনলাইনের মাধ্যমে আপনি যে কোনো জমির খতিয়ান নাম্বারের সাহায্যে জমির মালিকানা বের করতে পারবেন।
বেসিক্যালি আপনাদের যদি এ বিষয়টি জানা থাকে তাহলে আপনারা কোর্ট-কাচারি বা ভূমি অফিসে না গিয়েই ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমেই আপনারা জমির মালিকানা বের করতে পারবেন। মূলত ভুমি অফিসে গিয়ে এসব ঝামেলা মাথায় না নিয়ে ঘরে বসেই জমির মালিকানা তথ্য বের করাটা অনেক সহজ। কেননা এখানে আপনাকে ভুমি অফিসে যেতে হচ্ছে না।
সময় অপচয় হচ্ছে না একইসাথে আপনি কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়াই সঠিক তথ্য পেয়ে যাচ্ছেন মুহুর্তেই। এছাড়া আপন যদি অন্য কারো জমির মালিকানা তথ্য বের করতে চান। তাহলে একই নিয়মে কিছু তথ্য পূরণ করে আপনারা খতিয়ানের সাহায্যে যে কোনো জমির মালিকানা তথ্য বের করে ফেলতে পারবেন।
আর আপনারা যদি অন্য জনের খতিয়ান সংগ্রহ করতে চান। তাহলে আপনি অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করার সময় অবশ্যই আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার, মোবাইল নাম্বার, ঠিকানা ইত্যাদি কিছু তথ্য দিয়ে আবেদন করতে হবে। যদি আপনি অনলাইন আবেদনের মাধ্যমে খতিয়ান এর কপি সংগ্রহ করতে চান।
সেক্ষেত্রে আপনাকে কোনো ধরনের টাকা পয়সা খরচ করতে হবে না বা এর জন্য কোনো ধরনের বাড়তি ফি প্রদান করতে হবে না। তবে আপনি যদি ভূমি অফিসের মাধ্যমে সার্টিফাইড আসল খতিয়ান কপি সংগ্রহ করতে চান। তাহলে আপনাকেইউ ক্যাশ এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি প্রদান করে এই কপি সংগ্রহ করতে হবে।
এভাবে আপনারা আপনার হাতে থাকা অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস বা কম্পিউটার ব্যবহার করে ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে সহজেই জমির মালিকের নাম যাচাই করতে পারবেন। এটি বর্তমান সরকারের একটু যুগান্তকারী উদ্যোগ। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে, কিভাবে অনলাইনের মাধ্যমে জমির মালিকানা বের করতে হয়। এবং এখন থেকে আপনার সহজেই যে কোনো জমির মালিকানা তথ্য বের করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার নিয়ম
আরও পড়ুন: ভোটার তালিকা দেখার উপায়
আরও পড়ুন: নতুন আইডি কার্ড কিভাবে দেখব
আমাদের শেষকথা
অনলাইনের মাধ্যমে জমির মালিকানা বের করার উপায়টি সত্যি দারুণ একটি উপায়। এবং এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ বটে। আর এই প্রক্রিয়াটি বর্তমানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
আমাদের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা নিয়মিত টেকনোলজি, টেক, ব্লগ ইনফো, কম্পিউটার, মোবাইল টিপস, ভ্রমণ, স্বাস্থ টিপস সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর আর্টিকেল পাবলিশ করে যাচ্ছি। এবং আমাদের এই ধারা আগামী দিনেও অব্যহত থাকবে বলে আমরা আশাবাদী। আমরা আশা রাখি যে আপনারা এই ব্লগটি দারুণ পছন্দ করবেন।