জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার নিয়ম

আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করব জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে। জন্ম নিবন্ধন হলো একটি শিশু জন্মের পর তার প্রথম সরকারি পরিচয় পত্র বা সনদ। এই জন্ম নিবন্ধন একটি মানুষের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি শিশুর প্রথম স্কুল ভর্তি শুরু থেকে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, জাতীয় পরিচয় পত্র ইত্যাদি সরকারি-বেসরকারি যেকোনো কাজে জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট খুবই প্রয়োজন। তাই শিশুর বাবা মা এর সঠিক তথ্য দিয়ে জন্ম নিবন্ধন করবেন। যেনও পরবর্তীতে এই জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট টি সংশোধন করার প্রয়োজন না পড়ে। সঠিক পদ্ধতিতে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয়া হবে। এখানে দুটি পদ্ধতিতে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার পদ্ধতি দেখানো হবে। যেমন অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি এবং অফলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার নিয়ম এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার জন্য যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো দরকার তা এখানে দেওয়া হলো।

বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন হলেঃ

  • আবেদনকারীর টিকার কার্ড।
  • পিতা-মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সহ জাতীয় পরিচয় পত্র। পিতা-মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সহ জাতীয় পরিচয় পত্র।
  • বাসা হোল্ডিং নাম্বার ও চৌকিদারি দাখিলা।
  • অভিভাবকের মোবাইল নাম্বার।
  • ফরমের সাথে আবেদনকারীর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

বয়স ৪০ দিন হতে ৫ বছর হলেঃ

  • আবেদনকারীর টিকার কার্ড।
  • স্বাস্থ্যকর্মীর প্রত্যায়ন।
  • পিতা-মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সহ জাতীয় পরিচয় পত্র।পিতা-মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সহ জাতীয় পরিচয় পত্র।
  • প্রয়োজন ক্ষেত্রে স্কুল প্রদানের শিক্ষকের প্রত্যয়ণপত্রসহ বিদ্যালয় অধ্যায়নের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট।
  • বাসা হোল্ডিং নাম্বার ও চৌকিদারি দাখিলা।
  • অভিভাবকের মোবাইল নাম্বার।
  • ফরমের সাথে আবেদনকারীর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

বয়স ৫ বছর এর বেশি হলেঃ

  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র(পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি)।
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র না থাকলে সরকারি হাসপাতালে এমবিবিএস ডাক্তারের এবং জন্ম নিবন্ধন আবেদন ফরম ৭ এর ১ নং কলামে স্বাক্ষরসহ সীল নিতে হবে।
  • উল্লেখ্য যে যাদের জন্ম ০১-০১-২০০১ বা এরপর সে ক্ষেত্রে পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন সনদ ও জাতীয় পরিচয় পত্র বাধ্যতামূলক।
  • যাদের জন্ম ০১-০১-২০০১ এর পূর্বে তাদের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক।
  • যাদের জন্ম ০১-০১-২০০১ এর পূর্বে পিতা মাতা মৃত হলে তাদের মৃত সনদ পত্র বাধ্যতামূলক।
  • যাদের জন্ম ০১-০১-২০০১ এর পূর্বে পিতা মাতা মৃত হলে প্রথমে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন গ্রহণ, এরপর অনলাইন মৃত্যু সনদ পত্র গ্রহণ , এই উভয় সনদ পত্র দাখিলের সময় জমা দিতে হবে।
  • বাসা হোল্ডিং নাম্বার ও চৌকিদারি দাখিলা।
  • অভিভাবকের মোবাইল নাম্বার।
  • ফরমের সাথে আবেদনকারীর এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

বিঃ দ্রঃ

  • আবেদনের সাথে সংযুক্ত সকল ডকুমেন্ট পত্র সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অথবা ইউপি সদস্য অথবা ইউপি সদস্য কর্তৃক সত্যায়িত করতে হবে।
  • আবেদনের সাথে সংযুক্ত সকল ডকুমেন্ট পত্র আবেদন জমা দেওয়ার সময় মূল কপি প্রদর্শন করতে হবে।
  • উপরুক্ত চাহিত ডকুমেন্ট ছাড়া আবেদনপত্র কোন প্রকার গ্রহণযোগ্য নয়।

জন্ম নিবন্ধন তৈরি খরচ

এখানে জন্ম নিবন্ধন তৈরি করার জন্য যে ফি ধার্য করা হয়েছে তা উল্লেখ করা হলোঃ

দেশে আবেদনের ক্ষেত্রেঃ

  • শিশুর বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত বিনামূল্যে আবেদন করতে পারবেন।
  • শিশুর বয়স ৪৫ দিন থেকে ৫ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকায় আবেদন করতে পারবেন।
  • শিশুর বয়স ৫ বছর পর থেকে ৫০ টাকায় আবেদন করতে পারবেন।

বিদেশে আবেদনের ক্ষেত্রেঃ

  • শিশুর বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত বিনামূল্যে আবেদন করতে পারবেন।
  • শিশুর বয়স ৪৫ দিন থেকে ৫ বছর পর্যন্ত ১ মার্কিন ডলার আবেদন করতে পারবেন।
  • শিশুর বয়স ৫ বছর পর থেকে ১ মার্কিন ডলার আবেদন করতে পারবেন।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার নিয়ম

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করার নিয়ম

বর্তমানে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার পদ্ধতি রয়েছে। এ পদ্ধতি শুরু হয় ২০১০ সালের দিকে। অনলাইনে আবেদন করার পাশাপাশি সরাসরি পরিষদে গিয়েও আপনি জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু বর্তমানে সবাই অনলাইনে বেশি আবেদন করে থাকে এর সুবিধা হিসেবে আপনি সঠিক তথ্যের মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন করতে পারবেন। যেন ভবিষ্যতে এর সংশোধনের প্রয়োজন না হয়। অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি গুলো ধাপে ধাপে সুন্দরভাবে উল্লেখ করা হচ্ছে যেন আপনাদের এক্ষেত্রে ভুল না হয়।

প্রথমে আপনার মোবাইল অথবা কম্পিউটার ব্রাউজার এ গিয়ে https://bdris.gov.bd/ এই লিঙ্কে প্রবেশ করুন।

লিংকে প্রবেশ করার পর এরকম একটি ইন্টারফেস দেখতে পারবেন। তারপর ওয়েবসাইটের মেনুবারে জন্ম নিবন্ধন একটি বাটন রয়েছে সেখানে ক্লিক করুন।

তারপর ওয়েবসাইটের মেনুবারে জন্ম নিবন্ধন একটি বাটন রয়েছে সেখানে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর আপনাকে এরকম একটি পেজ এ নিয়ে যাওয়া হবে। আপনি কোন ঠিকানা জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে চান? এখানে তিনটি ঠিকানা রয়েছে। জন্মস্থান, স্থায়ী ঠিকানা, এবং বর্তমান ঠিকানা। আপনার সুবিধা অনুযায়ী বা আপনি বর্তমানে যেখানে আছেন সেই অনুযায়ী আপনি সিলেক্ট করুন। তারপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

ক্লিক করার পর আপনাকে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন পেইজে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রথমে আপনার নাম কে দুই ভাগে বিভক্ত করবেন। নামের প্রথম অংশ বাংলায় আপনার নামের প্রথম দিক লিখবেন এবং নামের শেষ অংশ বাংলায় আপনার নামের শেষ ভাগ লিখবেন।

আপনার নামের ইংরেজি বানান দুই ভাগে বিভক্ত করুন। বাংলার মত করে প্রথম অংশ এবং দ্বিতীয় অংশে লিখুন।

তারপর সঠিকভাবে জন্মতারিখ সঠিকভাবে বসান। আবেদনকারী পিতা ও মাতার কততম সন্তান তা সিলেক্ট করুন। তারপর আবেদনকারী পুরুষ নাকি মহিলা তা সিলেক্ট করুন। আবেদনকারীর বয়স যদি ১৮ উপরে হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ভোটার আইডি কার্ডের নাম্বার লাগবে্

আবেদনকারীর জন্ম স্থানের ঠিকানা এভাবে পূরণ করুন। যেমন বিভাগ, জেলা, উপজেলা বা সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ।ডাকঘর একবার বাংলায় এবং একবার ইংরেজিতে লিখুন। গ্রাম/ পাড়া/মহল্লা এটিও বাংলায় এবং ইংরেজিতে লিখুন। বাসা ও সড়ক এ দুটি ও বাংলায় এবং ইংরেজি লিখুন।উপরের তথ্যগুলো সঠিক কিনা তা পুনরায় যাচাই করুন। তারপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

ক্লিক করার পর আপনাকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়া হবে। এই ধাপে আবেদনকারীর পিতা মাতার বিস্তারিত তথ্য পূরণ করতে হবে।

প্রথমে পিতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিতে হবে। তারপর পিতার নাম বাংলায় ও ইংরেজিতে লিখতে হবে। পিতার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর এখানে বসাতে হবে। তারপর পিতার জাতীয়তা মানে কোন দেশের নাগিরিক সেটি সিলেক্ট করতে হবে।

এখন মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর এখনে বসাতে হবে। তারপর মাতার নাম বাংলায় ও ইংরেজিতে লিখতে হবে। মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর এখানে লিখতে হবে। তারপর মাতার জাতীয়তা বা কোন দেশের নাগরিক তা এখানে সিলেক্ট করতে হবে। উপরের তথ্যগুলো সঠিক কিনা তা পুনরায় যাচাই করুন। তারপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

তারপর আপনাকে নতুন একটি পেইজ এ নিয়ে যাওয়া হবে। এখান দেখতে পারবেন আপনি কি নিম্নলিখিত কোন ঠিকানা আপনার স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করতে চান? যদি না চান তাহলে কোনটাই নয় এটাই ক্লিক করুন। এটি সিলেক্ট করার পর দেখতে পাবেন আপনার জন্মস্থান এর ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানা একই কিনা? যদি একই হয় তাহলে টিক দেওয়ার পরে দেখতে পারবেন আপনার ঠিকানা গুলি অটোমেটিক পূরণ হয়ে গেছে।

আর যদি ঠিকানা একই না হয় তাহলে এখানে উল্লেখিত অপশন অনুসারে আপনি সঠিক ঠিকানা লিখুন। আপনি কি নিম্নলিখিত কোন ঠিকানা আপনার বর্তমান ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করতে চান যদি না চান তাহলে কোনটাই নয় এটি সিলেক্ট করুন। আপনার যদি একটি স্থায়ী ঠিকানা বর্তমান ঠিকানা একই হয়ে থাকে তাহলে টিক দিন। এখন পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।

আপনাকে নতুন একটি পেজ এ নিয়ে যাওয়া হবে। এখানে আপনি দেখতে পারবেন আবেদনকারীর ব্যক্তির সহিত সম্পর্ক এখানে আপনি যদি ১৮ বছর বয়স এর বেশি হয়ে থাকে তাহলে আপনি নিজেই আবেদন করতে পারবেন। আর যদি আপনার বয়স ১৮ বছরের নিচে হয় তাহলে আপনার পিতা-মাতার আবেদন করতে হবে।

এখানে যদি নিজ হয়ে থাকে তাহলে আবেদনকারীর নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল দিতে হবে। যদি আবেদনকারীর পিতা-মাতা আবেদন করে থাকে তাহলে জন্ম নিবন্ধন নম্বর, জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, আবেদনকারীর নাম, ফোন নাম্বার ও ইমেইল দিতে হবে।

নিচে সংযোজন বাটন দেখতে পাবেন। এখানে আপনার ডকুমেন্ট হিসেবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাবমিট করতে হবে। এখানে আপনার ফাইলগুলি 100 kb এর ভিতর রাখতে হবে। আপনি যদি আগে থেকে ছবি তুলে রাখেন তাহলে ফাইলে গিয়ে ছবি গুলো সিলেক্ট করুন। যদি সরাসরি ছবি তুলে দিতে চান তাহলে ক্যামেরা সিলেক্ট করুন এবং ছবি তুলে আপলোড করুন।

বিঃদ্রঃ এই আর্টিকেলের একদম উপরে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগবে সেগুলি বিস্তারিত দেওয়া রয়েছে। যদি আবেদনকারীর বয়স ১৮ উপরে হয় তাহলে কি কি কাগজপত্র লাগবে তার একটি তালিকা রয়েছে। তালিকা অনুসারে কাগজগুলি আপলোড করুন। আর যদি আবেদনকারীর বয়স ১৮ কম হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে কি কি কাগজপত্র লাগবে সেগুলো এখানে দেওয়া রয়েছে। সেই অনুসারে কাগজপত্রগুলো আপলোড করুন।

সকল ডকুমেন্টগুলো আপলোড করার পর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন। এখন আপনি দেখতে পারবেন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আপনি যে তথ্যগুলি সাবমিট করেছেন সে তথ্যগুলি এখানে রয়েছে। আপনি কয়েকবার এই তথ্যগুলি রিভিশন দিন, পুনরায় যাচাই করুন যেন কোন তথ্য ভুল না থাকে।

যদি কোন ভুল থেকে থাকে তাহলে নিচে পূর্ববর্তী একটি বাটন রয়েছে। বাটনে ক্লিক করে ওই যেখানে ভুল আছে সেই পৃষ্ঠায় গিয়ে ভুল সংশোধন করে আবার পরবর্তি বাটনে ক্লিক করে একদম শেষ পৃষ্ঠায় চলে আসুন। তারপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর দেখতে পারবেন আপনার আবেদনটি সফল হয়েছে। এখন আপনি দেখতে পারবেন আবেদনপত্র নাম্বার। আবেদনপত্র নাম্বারটি একটি স্ক্রিনশট রাখুন অথবা একটি সুরক্ষিত জায়গায় লিখে রাখুন।

এখন দেখতে পারবেন আবেদনপত্র প্রিন্ট করুন একটি বাটন সেখানে ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর আপনার আবেদনকৃত ফরমটি চলে আসবে। আপনি যদি মোবাইল দিয়ে আবেদন করে থাকেন তাহলে একটি স্ক্রিনশট রাখুন। যদি ডাউনলোড করার সুযোগ থাকে ডাউনলোড করুন। কম্পিউটার থেকে যদি আবেদন করে থাকেন তাহলে এটি ডাউনলোড করে রাখতে পারেন অথবা প্রিন্ট করুন।

এই প্রিন্ট কপি এবং সাথে আবেদনকারীর বাবা-মার জন্ম সনদের ফটোকপি এবং জাতীয় পরিচয় পত্র এগুলি সাথে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ / পৌরসভায় জমা দিন। কর্তৃপক্ষ কয়েকদিন এটি যাচাই করার পর যদি সঠিক সবকিছু থাকে তাহলে কয়েকদিনের ভিতরে আপনার জন্ম সনদ টি রেডী হয়ে যাবে। তারপর আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে।

এরপর আপনার জন্ম সনদ সংগ্রহ করে ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভায় চেয়ারম্যান এবং সচিবের সীল ও সিগনেচার এর মাধ্যমে আপনার জন্ম সনদের কার্য প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে।

যদি আমাকে কাগজপত্র নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ বাপৌরসভায় যেতে হয় তাহলে আমি কেন অনলাইনে আবেদন করলাম? এর কারণ হলো পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের অনেক কাজের চাপ থাকে। সে ক্ষেত্রে আপনার আবেদন করার সময় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে নির্ভুল করার জন্য আপনি মোবাইল বা কম্পিউটার এর মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করবেন।

অফলাইন বা পরিষদে গিয়ে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার নিয়ম

বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য সশরীরে পরিষদে গিয়ে করতে পারবে। অনেকে এই পদ্ধতিতে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে থাকে। এই পদ্ধতিতে আবেদন করার করতে হলে আপনি যেখানে বসবাস করেন সেই ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা কার্যালয়ে যেতে হবে। এবং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যাবতীয় কাজ এই কার্যালয়ে করতে হবে।

প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদ পৌরসভা সেখান থেকে জন্ম সনদ করার জন্য আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে অথবা অনলাইন থেকে এই ফরমটি ডাউনলোড করে হাতে লিখতে পারবেন।

প্রথম ঘরে শিশুর জন্ম তারিখ, জন্মস্থান ও পুরুষ না মহিলা লিখতে হবে। জন্ম তারিখ এর উপরের ঘরে সংখ্যায় এবং নিচের ঘরে কথায় লিখতে হবে। আবেদনকারী পুরুষ বা নারী সেটা টিক চিহ্ন দিতে হবে। এরপর আবেদনকারীর জন্ম স্থানের ঠিকানা লিখতে হবে।

পরের ঘরে আবেদনকারীর পিতা ও মাতার নাম এবং তাদের জাতীয়তা লিখতে হবে।

তারপরের ঘর গুলি আবেদনকারীর স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা পূরণ করতে হবো

আবেদনকারী যদি কোনো শারীরিক সমস্যা বা প্রতিবন্ধকতা থাকে তাহলে ৫ নাম্বার ঘরে অসামর্থ্যতা অনুসারী একটি বা একাধিক ঘরে টিক চিহ্ন দিতে পারবেন।

পরের ঘরে আবেদনকারী অথবা আবেদনকারীর বাবা মা কিংবা যিনি আবেদন করেছে তার নাম স্বাক্ষর এবং আবেদনকারীর সাথে কি সম্পর্ক এবং আবেদনের তারিখ লিখতে হবে।

৭নম্বর ঘরের জন্য শিশু জন্মের যদি পাঁচ বছরের মাঝে আবেদন করে থাকে তাহলে শুধু ১ নম্বর ঘরে তথ্য সংগ্রহ কারীর স্বাক্ষর নিতে হবে।

যদি আবেদনকারীর বয়স ৫ বছরের বেশি হয় তাহলে দুই বা তিন নম্বর ঘরের তথ্য গুলো পূরণ করতে হবে। এই ফরমের আট নাম্বার ঘরের পর থেকে আবেদনকারীকে কোন তথ্য পূরণ করতে হবে না।

এই ফরমের তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করার পর এর সাথে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট গুলো যোগ করে ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা অফিসে জমা দিতে হবে।

আপনি যখন এই ফরমটির ডকুমেন্ট সহ কার্যালয়ে জমা দিবেন তখন তারা বাকি তথ্য গুলো পূরণ করে ফরমের নিচ থেকে একটি টোকেন আপনাকে দিবে। এই টোকেনে কত তারিখের পর আপনি কার্যালয়ে এসে জন্ম সনদের জন্য যোগাযোগ করবেন তা উল্লেখ থাকবে। তাই এই টোকেনটি যত্ন সহকারে রেখে দিবেন।

টোকেন দেওয়ার তারিখ অনুযায়ী পরিষদে বা পৌরসভায় গিয়ে টোকেন জমা দেওয়ার সময় স্বাক্ষর করে জমা দিবেন। তারপর আপনাকে কাঙ্ক্ষিত জন্ম সনদ টি আপনার কাছে তুলে দিবে। জন্ম সনদ সংগ্রহ করার সময় অবশ্যই তথ্য এবং সাক্ষরগুলো যাচাই করে নিবেন।

আরও পড়ুন: হানিফ পরিবহন অনলাইন টিকিট, কাউন্টার ও মোবাইল নাম্বার

আরও পড়ুন: নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি

আরও পড়ুন: অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন যাচাই ও ডাউনলোড করার নিয়ম

আমাদের শেষকথা 

আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে শেয়ার করেছি কিভাবে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম ও অফলাইনে বা সশরীরে ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা গিয়ে জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করার নিয়ম এই বিষয়ে এবং আরও শেয়ার করেছি জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন এবং কত টাকা ফি প্রয়োজন এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা উপকৃত হবেন।

আমাদের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত তথ্যবহুল আর্টিকেল পাসপোর্ট, ভোটার আইডি কার্ড, টেকনোলজি,  কম্পিউটার, মোবাইল, ভ্রমণ, ইত্যাদি সম্পর্কিত বিভিন্ন আর্টিকেল পাবলিশ করে আসছি। আশা করি আপনারা আমাদের এই ব্লগটি পছন্দ করবেন।